ইসলামে কোন বিষয়ে না জেনে কথা বলাঃ
দ্বীনি কোন বিষয়ে জানা না থাকলে সরাসরি বলা উচিত এ বিষয়টি আমার জানা নেই। অকারণে উল্টা পাল্টা বলে নিজেকে সবজান্তা প্রমাণ করে নিজের জন্য জাহান্নাম নির্ধারণ করে নেওয়ার কোন অর্থ নেই। যেটা জানা নেই তা পড়ে জেনে অথবা গবেষনা করে জানতে হবে। কারণ এমন কোন বিষয় নেই যা কোরআন এবং হাদীসে নেই।
আবূ যার (রাঃ) বলেন, আকাশে যে পাখি তার দু’ ডানা ঝাপটায় তার জ্ঞান সম্পর্কেও নবী করীম (ছাঃ) আমাদের নিকট আলোচনা করেছেন।(মুসনাদে আহমদ হা/২১৬৮৯,২১৭৭০, ২১৭৭১, ২১৩৯৯; ৫/১৬৩ পৃষ্ঠা; সহীহা ১৮০৩)।
তবে জানা ও না জানার বিষয়টি একটি আপেক্ষিক ব্যাপার মাত্র। দু’জন বিজ্ঞ আলেমকেও দেখা যাবে যে, একই সময়ে একটি বিষয় একজনের জানা আছে, অপরজনের জানা নেই। সাহাবায়ে কেরামরে মধ্যেও এরূপ ছিল। এমনকি উম্মতের শ্রেষ্ঠ্য ব্যক্তিত্ব মহামতি চার খলীফা হযরত আবূ বকর, ওমর, উসমান এবং আলী (রাঃ) অনেক হাদীস না জানার কারণে অন্যান্য সাহাবীর নিকট থেকে জেনে নিয়ে ফায়ছালা দিতেন। হাদীসের পৃষ্ঠাসমূহে যার ভুরি ভুরি প্রমাণ মওজুদ রয়েছে।(দ্রঃ ইমাম ছালেহ ফুল্লানী (১১৬৬-১২১৮ হিঃ) প্রণীত ‘ঈকাযু হিমাম’ (বৈরুত: দারুল মারিফাহ ১৩৯৮/১৯৭৮ খ্রঃ) পৃঃ ৬-৯, ৮৭-৮৮; ইবনুল কাইয়্যম, ইলামুল মুয়াকক্বিন’ঈন ২য় খন্ড পৃঃ ২৭০-৭২)।
এ যুগেও যদি আমাদের কোন বিষয়ে না জানা থাকে, তাহলে আমরাও কোন আলেমের নিকট থেকে পবিত্র কোরআন ও সহীহ হাদীসের ফায়ছালা জেনে নিব। কেবল একটি বিষয় লক্ষ রাখতে হবে যে, প্রশ্নকারী কেবল কোরআন ও সহীহ হাদীস থেকেই ফায়ছালা চাইবেন। কোন মাযহাবের বা কোন ব্যক্তির সিদ্ধান্ত নয়। এমনি ভাবেই যিনি ফাৎওয়া দিবেন, তিনিও কোরআন ও সহীহ হাদীস থেকেই ফাৎওয়া দিবেন। না জানা থাকলে বলবেন, আমি জানি না। নিজের রায় অনুযায়ী ফাৎওয়া দিলে সেটাও প্রশ্নকারীকে বলে দিবেন। মোট কথা আলেমের কর্তব্য এটাই হবে যে, প্রশ্নকারীকে কোরআন ও হাদীস অনুযায়ী ফাৎওয়া দিয়ে তাকে জান্নাতের পথে বাৎলে দেওয়া। এ ব্যাপারে যদি তাকে জান-মাল ইয্যত ও পদ মর্যাদার ঝুকি নিতে হয়, তাও নিতে হবে। তথাপি সমাজের ভয়ে বা লৌকিকতার কারণে কোরআন ও সহীহ হাদীসের সিদ্ধান্ত সমাজকে জানিয়ে দেওয়ার পবিত্র দায়িত্ব থেকে পিছিয়ে আসা চলবে না।
মুহাদ্দিস যায়েদ বিন আসলাম বলেন, হাদীস মিথ্যা প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও যে তার উপর আমল করে, সে শয়তানের খাদেম। (তাযকীরাতুল মাওযু‘য়াত পৃষ্ঠা-৭)
No comments:
Post a Comment