Sunday 30 August 2015

ইসলাম বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি নির্ধারন করেছে



ইসলাম বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি নির্ধারন করেছে।
.
.
এ নীতিগুলো জানা থাকলে, সিদ্ধান্ত গ্রহন সহজ। এগুলো পরিমাপকের কাজ করে। এর আলোকেই ইসলামের বিষয়াদি নির্ধারিত হয়ে আসছে। সে আলোকে কোন লোক তার জীবন পরিচালনার লক্ষ্যে নিয়মিত জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি এ সকল মৌলিক নীতিগুলোকে আয়ত্তে রাখলে, মেনে চললে-তার পক্ষে আমলী জীবন নির্বাহ সহজ হবে। আল্লাহ আমাদের জীবনকে দ্বীনের উপর সম্পূর্ণভাবে পরিচালনার তওফিক দিন। আমীন।

Sunday 23 August 2015

টাকনুর নিচে কাপড় পরিধান করা পুরুষের জন্য হারাম


الحمد لله ربي العلمين و العقبة للمتقينو صلى عليه رسول الأمين و يعد :-
প্রশ্ন :- টাকনুর নিচে কাপড় পরিধান করা পুরুষের জন্য যায়েজ কি ??
উত্তর:-
সৌদি আরবের উচ্চ ওলামা পরিষদের সাবেক সদস্য শাইখ আল্লামা মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহ এর ফাতওয়াঃ
দেহের নিম্নাংশের পরিধেয় পোষাক টাখনুর নিচে ঝুলানোর দ্বারা যদি অহংকার প্রকাশ উদ্দেশ্য হয়, তাহলে তার শাস্তি হচেছঃ “ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়া‘লা তার দিকে তাকাবেন না, তার সাথে কথা বলবেন না, তাকে (পাপ হতে) পবিত্র করবেন না এবং তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। পক্ষান্তরে যদি তা দ্বারা অহংকার প্রকাশ উদ্দেশ্য না হয়, তাহলে তার শাস্তি হচেছঃ “দু‘ টাখনু হতে যা নিচে নামবে সেই অংশকে আগুন দ্বারা শাস্তি দেয়া হবে। কারণ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
“তিন ব্যক্তি যাদের সাথে আল্লাহ তায়া‘লা কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, যাদের দিকে তাকাবেন না, যাদেরকে পবিত্র করবেন না, এবং যাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি, তারা হলোঃ- যে ব্যক্তি পায়ের টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরে, দান করার পর যে ব্যক্তি খুঁটা দেয় এবং মিথ্যা কসম খেয়ে যে তার পন্যদ্রব্য বিক্রয় করে ৷
তিনি আরোও বলেনঃ-
“ যে ব্যক্তি অহংকার করে তার পোষাক ঝুলালো আল্লাহ তার দিকে কিয়ামতের দিন তাকাবেন না”। এই শাস্তি ঐ ব্যক্তির জন্য, যে অহংকার বশতঃ তার পোষাক ঝুলাবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অহংকারের উদ্দেশে ঝুলায় না তার শাস্তি হলোঃ যা সহীহ বুখারীতে হযরত আবু হুরায়রাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ “লুঙ্গির যেটুকু গিরার নিচে হবে সেটুকু অংঙ্গ জাহান্নামে যাবে”।
এই হাদীসটি অহংকারের সাথে শর্তযুক্ত নয় এবং ইতিপুর্বে বর্ণিত হাদীসেও (অহংকারের) শর্ত যুক্ত করা প্রকাশ পায়না । তার আরোও প্রমান আবু সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হাদীস, তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
“মুমিন ব্যক্তির পরিধেয় পোষাক পায়ের গোছার অর্ধাংশ পর্যন্ত এবং তাতে কোন গুনাহ নাই”। অথবা বলেনঃ “পায়ের গোছা এবং গিরার মধ্য পর্যন্ত পোষাক পরলে কোন গুনাহ হবে না, আর এ থেকে যেটুকু অংশ গিরার নীচে হবে সেটুকু অংঙ্গ জাহান্নামে যাবে ”।( হাদীসটি ইমাম মালেক, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজা, ও ইমাম ইবনে হিব্বান (রাহমাতুল্লাহি আলাইহিম জামীআ) বর্ণনা করেন এবং ইমাম ইবনে হিব্বান তার তারগীব ও তারহীব গ্রন্থে পোষাকের ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান অধ্যায়ে তা উল্লেখ করেন। (৩নং খন্ড, ৮৮ নং পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য )
আরোও দলিল হলোঃ——- দু‘টি কাজই ভিন্ন এবং দু‘টি কাজের শাস্তিও ভিন্ন, আর যখন বিধান এবং কারণ ভিন্ন হবে তখন এর মাঝে বৈপরিত্ব অপরিহার্য হওয়ার কারণে আম বা সাধারণকে খাস বা নির্দিষ্টের উপর চাপিয়ে দেয়া নিষিদ্ধ।
আর যে ব্যক্তি আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু এর হাদীসকে দলিল স্বরূপ পেশ করে, তাকে আমরা বলবঃ দু‘টি কারণে তার মধ্যে আপনার পক্ষে দলিল সাব্যস্ত হচ্ছে নাঃ
প্রথমতঃ স্বয়ং আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেনঃ “আমার পোষাকের দু‘পার্শ্বের কোন এক পার্শ্বের কাপড় ঢিল হয়ে ঝুলে পড়লে তার প্রতি আমি খুব সতর্ক থাকি যেন আর কখনও ঝুলে না পড়ে” । তিনি স্বেচ্ছায় অহংকার বশতঃ তার কাপড় ঝুলিয়ে দেননি, বরং তা নিজেই ঢিল হয়ে ঝুলে গেছিল , তা সত্বেও তিনি তার প্রতি সতর্ক ছিলেন। আর যারা তাদের পোশাক টাখনু বা গিরার নিচে ঝুলিয়ে দেয় এবং দাবী করে যে, তারা অহংকারের ইচ্ছা করে না, তবে ইচ্ছা করে তারা তাদের কাপড় ঝুলিয়ে দেয়, তাদের উদ্দেশ্যে বলব – টাখনু বা পায়ের গিরার নিচে আপনার কাপড় নামিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য যদি অহংকার না হয়, তবে শুধুমাত্র জাহান্নামের আগুন দ্বারা আপনার ঐ অংশটুকুকে আযাব দেয়া হবে যেটুকুর উপর কাপড় নেমেছে। আর যদি আপনি কাপড় ঝুলিয়ে দেন অহংকার বশতঃ তাহলে আপনাকে এর চাইতে বড় শাস্তি দেয়া হবে ।
আর তা হচ্ছেঃ “ কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তায়া‘লা আপনার সাথে কথা বলবেন না, আপনার দিকে তাকাবেন না, আপনাকে ( পাপ থেকে ) পবিত্রও করবেন না এবং আপনার জন্য রয়েছে জাহান্নামের যন্ত্রনাদায়ক আযাব।
দ্বিতীয়তঃ আর আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুর প্রশংসা স্বয়ং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেছেন এবং তার পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ঐ সমস্ত লোকদের অন্তর্ভুক্ত নন যারা অহংকার বশতঃ এটা করে ।
সুতরাং যারা টাখনু বা পায়ের গিরার নিচে কাপড় ঝুলিয়ে দেয় তাদের কেউ কি ঐ রকম প্রশংসা পত্র এবং সাক্ষ্য বা সার্টিফিকেট অর্জন করতে পেরেছে ? কিন্তু শয়তান কিছু মানুষের জন্য কিতাব ও সুন্নাতের দলীলের অনুর্রপ ( সদৃশ আমলের ) অনুসরণের দ্বার উম্মুক্ত করে, যেন তারা যা করছে তা থেকে তাদের নির্দোষ ঘোষণা করা হয়। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছে করেন তাকে তিনি সোজা সরল পথের দিকে পরিচালিত করেন। আল্লাহ তায়া‘লা আমাদেরকে সোজা সরল পথের উপর চলার তাওফীক দান করুন । আমীন।
টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পড়ার কিছু ক্ষতিকর দিকঃ
1. এর মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করা হয়।
2. অর্থের অপচয় এবং শয়তানকে খুশি করা হয়।
3. নিম্নাংশের ঝুলানো অংশটি তাড়াতড়ি ময়লা হয়।
4. এ সম্পর্কে বর্ণিত সমস্ত হাদীসগুলির অপব্যাখ্যা করা হয়।
5. ইসলামি কৃষ্টি ও কালচার সমাজ থেকে উঠে যায়।
6. সৎ আমল করার উৎসাহ নষ্ট হয়ে যায়।
7. অমুসলিমদের সাথে সাদৃশ্য রাখা হয়।
8. এর মাঝে বিনয়ী ও নম্রতা ভাব প্রকাশ পায় না।
9. ইসলামি পোষাক এবং অন্যান্য পোষাকের মাঝে যে ব্যবধান রয়েছে তার তোয়াক্বা করা হয় না।
10. কোরআন ও হাদীসের উপর নিজের মতকে প্রাধান্য দেয়া হয়।
11. ইসলামি লেবাসের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাবে পক্ষান্তরে সমাজে কুরুচিপূর্ণ ও অশালিন লেবাস বৃদ্ধি পাবে।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সত্য জানা ও তার উপর আমল করার তাওফিক দান করুন

Friday 21 August 2015

দাড়ি কামিয়ে ফেলার ফলে সংঘটিত সাতটি গুনাহ

*দাড়ি কামিয়ে ফেলার ফলে সংঘটিত সাতটি গুনাহ*
-----------------------------------------------
.
.
আসসালামু আলাইকুম। দাড়ি রাখা/না রাখা যেন বর্তমান সময়ে অনেকের কাছেই সমার্থকে এসে দাড়িঁয়েছে। দাড়ি কামিয়ে ফেলার ফলে একজন মুসলিম কি ধরনের গুনাহতে জড়িয়ে পড়ছেন সে সম্পর্কে নীচে একটি ছোট আর্টিকেল দেয়া হল:
(১) অবাধ্যতা
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন,
"আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূল যখন কোনো ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন তখন কোনো মুমিন পুরুষ ও কোনো মুমিন নারীর তাদের সে ব্যাপারে নিজেদের কোনো রকম এখতিয়ার থাকবে না - (যে তারা তাতে কোনো রদবদল করবে); যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করবে, সে নিসন্দেহে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে নিমজ্জিত হয়ে যাবে।" (আল-আহযাব ৩৬)
"তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আল্লাহ তায়ালা এবং তাঁর রসূলকে অমান্য করে, তার জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আগুন, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।" (সূরা জ্বিন ২৩)
"রাসূল তোমাদের যা কিছু দেয় তা তোমরা গ্রহণ করো এবং সে যা কিছু নিষেধ করে তা থেকে বিরত থাকো, আল্লাহ তায়ালাকেই ভয় করো; অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা কঠোর শাস্তিদাতা।" (হাশর ৭)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
"আর আমি যাকিছু নিষেধ করেছি তা থেকে বেঁচে থাকো" [৩]
হযরত আমর ইবন শুয়াইব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
“বার্ধক্যে (সাদাচুলকে) উপড়ে ফেলো না। কেননা তা কিয়ামতের দিন মুসলমানের জন্য আলোকবর্তিকা হবে”। (তিরমিযি, আবু দাউদ, রিয়াদুস সালেহিন ১৬৪৬)
"যে আমার সুন্নাহ'র বিরাগভাজন হয়, তার আমার সাথে কোন লেনদেন নেই।" (বুখারী, ৪৬৭৫)
দাড়ি কিংবা মাথা থেকে চুল উপড়ে ফেলার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। প্রকৃতপক্ষে, যে তার দাড়ি কামিয়ে ফেলে সে কালো কিংবা সাদা উভয় প্রকার চুলের বৃদ্ধিকেই অপছন্দ করে থাকে,অথচ সাদা দাড়িকে কিয়ামতের দিন মুসলমানের জন্য নূর হিসেবে বলা হয়েছে। ইমাম গাযযালী এবং ইমাম নওয়াবী (রাহিমাহুল্লাহ) উভয়ে বলেছেন, "যখন দাড়ি গজাতে শুরু করে তখন তা উপড়ে ফেলা হল মুরদ'দের [৪] সাথে সাদৃশ্য এবং একটি বড় মুনকারাত(মন্দ কাজ)"
(২) ঔদ্ধত্য ও হেদায়েতের পথ হারিয়ে ফেলা
সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেন,
"যে লোক রসূলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহরই হুকুম মান্য করল। আর যে লোক বিমুখতা অবলম্বন করল, আমি আপনাকে (হে মুহাম্মদ), তাদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠাইনি"। (নিসা ৮০)
যেহেতু রাসুলুল্লাহর সুন্নাহ (আদেশ, কাজ এবং গুণগতভাবে) বলছে দাড়ি বড় করার কথা, সেহেতু এটা কামিয়ে ফেলা হচ্ছে তাঁর সম্মানিত সুন্নাহ তথা জীবনাচরণের প্রতি একটি চরম অপমান।
তিনি বলেছেন,
"যে আমার সুন্নাহর বিরাগভাজন হয় সে আমার দলভুক্ত নয়"। (মুসলিম, ৩২৩৬; বুখারী, আহমদ, নাসায়ী)
"যে কেহ এমন আমল করবে যা করতে আমরা নির্দেশ দেইনি , তা প্রত্যাখ্যাত।" (মুসলিম)
আমাদেরকে সুন্দরতম গঠনে সৃষ্টি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে একটি নি'মা (নিয়ামত) এবং মর্যাদা। নিঃসন্দেহে দাড়ি কামানো সেই নিয়ামতকে অস্বীকার করে এবং যেই আল্লাহর রাসূল(সা) এর দেখানো পথ সর্বোত্তম পথ, সেই পথ থেকে বিচ্যুত হওয়াও বটে। এটা আমাদেরকে অবিশ্বাসীদের মতো স্তরেও নামিয়ে দেয় যাদের কাছে তাদের বদ কর্মগুলো সুশোভিত হয়ে দেখা দেয়; এভাবেই তাদের বিকৃত স্বভাব-প্রকৃতি আজকে তাদের বোধশক্তির এতটাই বিলোপ ঘটিয়েছে যে, তারা আজ বলছে, সভ্যতার অগ্রগতি ও অবস্থা অনুধাবনের জন্যে নারী পুরুষের বড় বাহ্যিক পার্থক্যগুলো (উদাহরণ স্বরুপ; দাড়ি) দূরীকরণ আবশ্যক !
(৩) আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন-বিকৃতি ঘটানো
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
"আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। " (রুম ৩০)
উক্ত আয়াতের তাফসীরে 'খালক' শব্দটি দ্বারা মানুষের ফিতরাহ তথা স্বাভাবিক স্বভাব প্রকৃতিকে বোঝানো হয়েছে।
ফিতরাগত বৈশিষ্টের পরিবর্তন সাধন হল শয়তানের অনুসরণ এবং পরম করুণাময় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার অবাধ্যতা। শয়তানের এই চক্রান্ত উন্মোচন করে দিয়ে আল্লাহ বলেন,
"শয়তান বললঃ আমি অবশ্যই তোমার বান্দাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট অংশ গ্রহণ করব।
তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব, তাদেরকে আশ্বাস দেব; তাদেরকে পশুদের কর্ণ ছেদন করতে বলব এবং
তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ দেব।
যে কেউ আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, সে প্রকাশ্য ক্ষতিতে পতিত হয়। " (নিসা ১১৮-১১৯)
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাবধান করে বলেছেন,
"আল্লাহ যেসব নারীদের অভিশাপ দিয়েছেন যারা উল্কি অঙ্কন করে এবং নিজেদের শরীরেও উল্কি আঁকে, এবং সেই সকল নারীদের যারা নিজেদের ভ্রু কামায় এবং যারা নিজেদের দাঁতের মাঝে কৃত্রিমভাবে ফাঁক বৃদ্ধি করে যাতে তাদেরকে দেখতে সুন্দর দেখায়, তারা আল্লাহর সৃষ্টির উপর নিজেরা পরিবর্তন সাধন করে।" [৫]
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের প্রতি এই অভিশাপের কারণ ব্যাখা করে বলেন, "আল্লাহর সৃষ্টির বিকৃতি সাধন করা"। এই অভিশাপ থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আল্লাহর সৃষ্টিগত বৈশিষ্টের পরিবর্তন নিষিদ্ধ। কাজেই যে তথাকথিত "সৌন্দর্য বর্ধন" এর জন্য তার দাড়ি কামিয়ে ফেলে সে আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন সাধন করে, সুবহানাল্লাহ ! সমস্ত প্রশংসা তাঁরই যিনি সব ভুল ত্রুটির ঊর্ধে এবং যিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন নিখুঁতভাবে।
দাড়ি কামানো 'আন-নামাস'র অন্তর্গত, যা হলো আরও বেশি 'সুন্দর' হবার জন্যে মুখমণ্ডল থেকে চুল কিংবা মহিলাদের চোখের ভ্রু উপড়ে ফেলা । পুরুষদের জন্যে যা অধিকতর কুৎসিত।
(৪) অবিশ্বাসীদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ
আল্লাহ মহামহিম তাঁর কালামে বলেছেন,
"এরপর আমি আপনাকে রেখেছি ধর্মের এক বিশেষ শরীয়তের উপর। অতএব, আপনি এর অনুসরণ করুন এবং অজ্ঞানদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন না। " (আল কুর'আন ৪৫:১৮) [৬]
এই আয়াতে পরিষ্কারভাবে তাদের থেকে পৃথক হবার কথা বলা হয়েছে যারা নিজেদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করে এবং আল্লাহর রাসুলের আদেশের অনুসরণ করে না। তাদের খেয়াল খুশির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত তাদের বাহ্যিক চেহারা-সাজ পোশাক এবং তারা তাদের বাতিল জীবনাচরণের থেকে যা অন্তর্ভুক্ত করে। কাজেই তাদের খেয়াল খুশির সাথে একমত পোষণ তাদের মিথ্যা বাতিল পথ অনুসরণেরই নামান্তর। আমাদের প্রতি আদেশ হল তাদের থেকে পৃথক হবার।
আল্লাহ পাক বলেন,
"যারা মুমিন, তাদের জন্যে কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবর্তীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয় বিগলিত হওয়ার সময় আসেনি? তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী।" (হাশর ১৬)
এই আয়াতে: "তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল", বিজাতিদের অনুকরণের বিরুদ্ধে একটি চূড়ান্ত নিষেধাজ্ঞা। ইবন কাসীর (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর তাফসীরে উল্লেখ করেছেন: "এ কারণেই আল্লাহ মুমিনদেরকে নিষেধ করেছেন তাদের (অবিশ্বাসীদের) অনুকরণ করতে"।
কুর'আনের শিক্ষা এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি যাকিছু নাযিল হয়েছে তার অন্যতম শিক্ষা হল মুসলমানদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট রক্ষা করা। একারণেই আমাদের কথা, কর্ম, ইচ্ছা বাসন ইত্যাদি এবং শরীয়তের বিষয়াদি পর্যন্ত যেমন সালাত, জানাযা, সাওম, খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ, পোশাক, চাল চলন, আচরণ, অভ্যাস ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে জাতীয় বৈশিষ্ট রক্ষা করার জন্যে আল্লাহর রাসূল বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। এরপরেও যারা মুসলমানদের জাতিয় বৈশিষ্ট ত্যাগ করে অন্যদের অনুসরণ অনুকরণ করে তাদের প্রতি তিনি বলেছেন, "যে আমাদের সুন্নাহ পরিত্যাগ করে অন্যদের সুন্নাহ অনুসরণ করে সে আমাদের মধ্য হতে কেউ নয়।" [৭]
মদীনার ইহুদীরা এই উদ্দেশ্যগুলো বুঝতে পেরেছিল এবং অনুধাবন করেছিলো যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের থেকে সকল বিষয়ে আলাদা হতে যাচ্ছেন এমনকি একেবারে ব্যক্তিগত কোন বিষয়েও। তারা মন্তব্য করেছিলো, "আমরা যা করি তার কোন কিছুরই বিরোধীতা না করে এই লোকটি (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের ছাড়বে না।" [৮]
হাসান আল বাসরী বলেন, " এমন ঘটনা খুব বিরল যে কেউ কাউকে অনুকরণ করে অথচ সে তার অনুসরণ করে না ( ইহকাল এবং পরকালে)।"
সম্মানিত আনসারদের থেকে কয়েকজন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, " হে আল্লাহর রাসূল ! আহলে কিতাবীরা তাদের দাড়ি কামিয়ে ফেলে এবং গোঁফ লম্বা করে।" জবাবে তিনি বলেন, "তোমরা তোমাদের গোঁফ ছাট এবং দাড়ি ছেড়ে দাও এবং আহলে কিতাবিদের সাথে বৈসাদৃশ্য গ্রহণ কর।"
তিনি আরও বলেন,
"তোমরা গোঁফগুলো কর্তন কর এবং দাড়ি ছেড়ে দাও (অর্থাৎ বড় করো)। তোমরা অগ্নিপূজকদের বিপরীত কর"। [(মুসলিম ২,৫১০]
আরেকটি হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
"গোঁফ ছোট কর (জুযযু) , আর দাড়ি বাড়তে দাও, এবং মেজিয়ান(পৌত্তলিক)দের বিপরীত কর।" (মুসলিম)
জুযযু (সর্বোচ্চ পরিমাণ) গোঁফ কামানো। শায়খ নাসির উদ্দীন আলবানী বলেন, "ছেটে ফেলার অর্থ যাকিছু উপরের ঠোটের উপরে ছড়িয়ে থাকে, এবং সম্পূর্ণ গোঁফ কামিয়ে ফেলা নয়, কারণ এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাস্তবিক এবং সুনিশ্চিত সুন্নাহর বিরুদ্ধাচারণ।" একারণেই যখন ইমাম মালিক(রাহিমাহুল্লাহ) এর কাছে যারা গোঁফ কামিয়ে ফেলে তাদের সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি বলেন, "আমি মনে করি সে একটি কষ্টকর যুলুম করল"। গোঁফ কামিয়ে ফেলা সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, "এটি একটি বিদ'আত (ধর্মের নামে নতুন উদ্ভাবিত বিষয়) যা লোকেদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে।" (আল বায়হাকী, ১: ১৫১, আরও দ্র ফাতহুল বারী ১০: ২৮৫-২৮৬)
আল-কুথা, তীরের শেষভাগের পালকগুচ্ছ। 'আল-কুথাতি বিল কুথালি', পালকগুচ্ছ সেদিকেই যায় যেদিকে তীর ছুটে যায়। এই উপমার সাহায্যে অমুসলিমদের কাজকর্মের অন্ধ অনুকরণ অনুসরণের কথা বোঝানো হয়েছে। রাসুলুল্লাহ এই উপমার সাথে আরেকটি উপমা দিয়ে বুঝিয়েছেন,
"তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের স্বভাবের অনুসরণ করবে, প্রতি পদে পদে, এমনকি তারা যদি কোন ধাব(গুইসাপের গর্ত) এও প্রবেশ করে তবে তোমরাও তাই করবে।" আমরা (সাহাবাগণ) জানতে চাইলাম, "হে আল্লাহর রাসূল ! আপনি কি ইহুদী ও নাসারাদের অনুকরণের কথা বলছেন?" তিনি বললেন, "নয়তো কারা?" (বুখারী, মুসলিম)
কেন কুফফারদের থেকে আলাদা বৈশিষ্টের হতে হবে?
আচার আচরণ এবং সাজ পোশাক হচ্ছে এমন কিছু বিষয় যা নিয়তের উপর অনির্ভরশীল। যে অন্যদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ আচরণ করে সে নিজেই তাদের সাথে নিজের আচরণকে মিলিয়ে নেয়, যদিও তার নিয়ত নাও থেকে থাকে। যদিওবা তার কোন উদ্দেশ্য না থেকে থাকে তবুও সে অনুকরণের দোষে দুষ্ট হলে এর আনুষঙ্গিক প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করতে ব্যর্থ হয়। আর এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুনির্দিষ্টভাবে কিছু কাজকে নিষেধ করে গেছেন যদিও তার পিছনে কোন নিয়ত বা উদ্দেশ্য নাও থেকে থাকে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে অনুকরণের জন্য অনুকরণ নাও করা হয়। নির্দোষভাবেও এরূপ অনুকরণ করা নিষিদ্ধ। উদাহরণস্বরূপ; তিনি সূর্যোদয়ের সময়, মধ্যাহ্নে এবং সূর্য ডোবার সময়ে সালাহ আদায়ে নিষেধ করেছেন, কারণ এই সময় গুলোতে মুশরিকরা সূর্যকে সিজদাহ করে থাকে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভালো করেই জানতেন মুসলিমরা সালাহ সূর্যকে উদ্দেশ্য করে নয়, আল্লাহকে উদ্দেশ্য করে আদায় করে থাকে। তবুও তিনি নিষেধ করেছেন এবং বিজাতি কুফফারদের থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ আচরণ এবং একইভাবে নারী-পুরুষের পারস্পরিক সাদৃশ্যপূর্ণ আচরণকে নিষিদ্ধ করে গেছেন। এর কারণ কোন মানুষ অনুকরণের দোষে দুষ্ট হলে , এক সময় সে যাকে অনুকরণ করে থাকে তার আনুষঙ্গিক কুপ্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করতে ব্যর্থ হয়।
অমুসলিম সম্প্রদায়ের মাঝে দাড়ি রাখার প্রচলন
ওহী নাযিলের পূর্বে কিংবা পরেও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময়কার আরব মুশরিকদের লম্বা দাড়ি ছিল (সহীহ মুসলিম দ্র, হাদীস ১৮০০-আরবী) কারণ আরবরা তাদের সৌন্দর্য শ্মশ্রুমণ্ডিত চেহারার কোন বিকৃতি সাধন করেনি। বস্তুত, ইসলামে মুশরিকদের এই সৌন্দর্যকে স্বীকার করেছে। আরব মুশরিকরা ছিল প্রকৃতপক্ষে ইবরাহীম আলাইহি সালামের সুন্নাহ থেকে পথভ্রষ্ট হয়ে যাওয়া একটি জাতি, কিন্তু তখনও তাদের মাঝে এই সুন্নাহটি চালু ছিল । সময়ের সাথে সাথে ইসলামের অন্যান্য মূল বিষয় থেকে সরে আসলেও এক লক্ষ চব্বিশ হাজার মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার নবীর সুন্নাহ থেকে আরব মুশরিকরা পর্যন্ত সরে আসেনি।
পশ্চিমারাও তাদের দাড়ি লম্বা করত যতক্ষণ না সপ্তদশ শতকে রাশিয়ার শাসক পিটার, দাড়ি কামানোর চল ইউরোপে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেই সময়কার কিংবা তার পূর্বেকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিজ্ঞানী, গবেষক, সভাসদ ও অন্যান্যদের আঁকা ছবি, ভাস্কর্য কিংবা প্রতিকৃতিতে আজও তার প্রমাণ মেলে। অধিকাংশই শ্মশ্রুমণ্ডিত ছিলেন।
পরবর্তীতে, মুসলিমদের মাঝেও পশ্চিমাদের অন্ধ অনুকরণের কারণে দাড়ি কামানোর এই কু-রীতিটির ব্যাপক প্রসার লাভ করে।
রাসুলুল্লাহর সময়কার মুশরিকদেরও দাড়ি ছিল, কিন্তু তাঁরা গোঁফ কামাতো না। মুসলিমরা তাদের থেকে আলাদা হলেন, মুসলিমরা ঠোটের উপরের গোঁফ ছাঁটতেন এবং দাড়ি ছেড়ে দিলেন, যেখানে মুশরিকরা তাদের দাড়ি ছোট করে রাখত সেখানে মুসলিমরা তাদের দাড়ি ছেড়ে দিলেন। এভাবেই সত্যানুসারীরা তাদের থেকে আলাদা হলেন যারা শিরকে লিপ্ত এবং পথভ্রষ্ট।
আবু শামাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, "কিছু লোক দাড়ি কামানো শুরু করল, এবং এটা তো মেজিয়ানদের (একটি মুশরিক সম্প্রদায়) থেকেও নিকৃষ্ট কারণ তারা তো কেবল দাড়ি ছোট করা শুরু করেছিল! "
টীকাঃ এখানে জেনে রাখা প্রয়োজন, কিছু মুশরিকেরা দাড়ি রাখছে একারণে আমাদের মুসলিমদের দাড়ি কামিয়ে ফেলার মাধ্যমে তাদের থেকে আলাদা হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কারণ;
প্রথমত, তাদের স্বাভাবিক এবং অধিকাংশের অবস্থা হল, তারা দাড়ি কামিয়ে ফেলে এবং দাড়ি কামানোর বিষয়টি তাদের থেকেই উদ্ভাবিত একটি বিষয়।
দ্বিতীয়ত, যে মুশরিকরা একারণে দাড়ি রাখছে যে এটা হচ্ছে পৌরুষ, অথবা তারা নবীদের অনুসরণের কারণে এটা করছে; তাহলে বুঝতে হবে তাদের এই ফিতরাগত ব্যাপারটি সুস্থ-স্বাভাবিক রয়েছে কারণ এই ব্যাপারে আমাদের শরীয়ার সাথে তাদের শরীয়া একমত হয়েছে। কিন্তু এরপরেও তাদের থেকে আমাদের আলাদা বৈশিষ্ট প্রকাশিত হয়েছে ঠোটের উপরের গোঁফ ছেটে ফেলার মাধ্যমে।
হযরত যায়েদ বিন আকরাম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন,
"যে ব্যক্তি স্বীয় গোঁফ ছাটবে না সে আমাদের দলভুক্ত নহে।" (তিরমিযি,সহীহ) [৯]
বর্তমান কুফফারদেরও অনেকে দাড়ি রাখে (যেমন ইহুদী, শিখ) যখন অন্যরা তা কামিয়ে ফেলে। যেটাই হোক, আমাদেরকে আদেশ করা হয়েছে যারা দাড়ি কামিয়ে ফেলে তাদের বিপরীত করতে যারা দাড়ি বড় করে তাদের বিপরীত করতে নয়। যদি অন্ধভাবে কুফফারদের বিপরীত আচরণ করার কথা বোঝানো হত তাহলে 'খাতনা' করাও রহিত হয়ে যেত কেননা ইহুদীরাও 'খাতনা' করে।
তৃতীয়ত, বর্তমান যুগে অধিকাংশ মুসলিম যারা দাড়ি কামিয়ে ফেলছে তারা এটা একারণে করছে না যে তারা মুশরিকদের বিপরীত করছে যদিও মুশরিকদের রীতি এবং নারী-পুরুষের পারস্পরিক সাদৃশ্য গ্রহণের বিপরীতে কুর'আন ও সুন্নাহর শক্ত অবস্থান রয়েছে। উপরন্তু, সুন্নাহ ফিতরাহর উপর প্রতিষ্ঠিত যা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তনশীল নয়। এটা এর উপরেও নির্ভরশীল নয় যে, কিছু মানুষ এর থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়বে। কাজেই, এটা ঠিক নয় যে আমরা অবিশ্বাসীদের সাথে বৈসাদৃশ্য গ্রহণের নাম করে আল্লাহর আইনের বিপরীতে করব।
(৫) নারীদের সাদৃশ্য গ্রহণ করা
বুখারী, আবু দাউদ,তিরমিযি ,নাসায়ী ও ইবনে মাজায় হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে যে,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“আল্লাহ তায়ালার ভর্ৎসনা ঐ সব পুরুষদের উপর যারা মহিলাদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে এবং ঐ সব মহিলাদের উপর যারা পুরুষদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে।" (বুখারী; ২/৮৭৪)
হযরত নাফে’ রাহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত, একদিন হযরত ইবনে উমার ও আবদুল্লাহ ইবনে আমর হযরত যুবাইর (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) এর কাছে ছিলেন। এমতাবস্থায় এক মহিলা ঘাড়ে ধনুক বহন করে মেষ পাল তাড়াতে তাড়াতে এগিয়ে এল। আবদুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা তাকে জিজ্ঞেস করলেন; “তুমি পুরুষ না মহিলা? সে বলল; “মহিলা”। তখন তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে আমরের দিকে তাকালে তিনি বললেন; আল্লাহ তায়ালা স্বীয় নবীর পবিত্র মুখ দিয়ে পুরুষদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বনকারী মহিলাদেরকে এবং মহিলাদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বনকারী পুরুষদেরকে অভিসম্পাত করেছেন।
কোন সন্দেহ নেই, একজন নারীর ধনুক বহনের ফলে যদি পুরুষের অনুকরণ করা হয়ে থাকে তবে একজন পুরুষের পক্ষে দাড়ি কামিয়ে ফেলাটা আরো অধিক পরিমাণে নারীদের সাথে সাদৃশ্য বহন করে। একজন নারী যদি নকল দাড়ি লাগায় তাহলে যেমন তাকে পুরুষ বলে মনে হত তেমনি একজন পুরুষ যদি স্বীয় সৌন্দর্য ও দাড়ি কামিয়ে ফেলে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে তবে তাকে তার বাহ্যিক চেহারার কথা বাদ দিলেও তার মানসিকতার কারণেই তাকে মেয়ে বলে অনেকেরই ভুল হতে পারে।
আরো উল্লেখ্য, পুরুষ কর্তৃক নারীর এবং নারী কর্তৃক পুরুষের কন্ঠস্বর অনুকরণও এর আওতাভুক্ত। নারী যখন পুরুষের মত আঁটসাঁট, পাতলা ও শরীরের আবরণযোগ্য অংশ অনাবৃত থাকে এমন পোশাক পরিধান করে, তখন সে পুরুষের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করে এবং অভিসম্পাতের যোগ্য হয়।
আপনি যদি একজন সাধারণ আহলে সুন্নাহ'র অনুসারী মুসলিমকে জিজ্ঞেস করেন, "দাড়িবিহীন চেহারার পুরুষের সাথে কাদের মিল বেশি?" সে উত্তর করবে, "মহিলা, নাবালক অথবা ইহুদী, খৃষ্টান"। আলেমগণ এই মিলকে বলেছেন 'আত-তাখান্নুথ' (effeminateness)। বিখ্যাত আলেম ইবন আবদুল বার রাহিমাহুল্লাহ বলেন, "দাড়ি কামানো হারাম, শুধুমাত্র মেয়েলি স্বভাবজাত পুরুষেরাই তা করতে পারে।"
(৬) অঙ্গহানির অপরাধ (act of mutilation)
ইমাম আহমাদ, আস-সাওরি এবং আবু হানিফা একমত পোষণ করে বলেন যে, যদি কারো দাড়ি মুণ্ডন করে দেয়া হয় হয় তবে এটি একটি অঙ্গহানির অপরাধ এবং সে ব্যক্তিকে পূর্ণ 'দিয়াহ' অথবা 'রক্ত মূল্য' পরিশোধ করতে হবে যেমনিভাবে বাদীকে তার চোখ কিংবা হাত হারানোর জন্যে ক্ষতিপূরণ হিসেবে 'রক্ত মূল্য' দেয়া হয়।
ইমাম বুখারী হতে বর্ণিত ,
"নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ডাকাতি এবং জোর জবরদস্তি করে অন্যের সম্পদ ছিনিয়ে নেয়া এবং অঙ্গহানিকে নিষেধ করেছেন"
ইবন হাজম বলেন, "তারা (মুসলিম আলেমগণ) একমত যে, দাড়ি কামানো একটি অঙ্গহানি, যা হারাম।" উপরন্তু, দাড়ি কামানো হচ্ছে আল্লাহর রাসূলের অবাধ্যতা এবং তা আল্লাহ তায়ালার অবাধ্যতা, কারণ:
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
"যে আমাকে মান্য করল সে আল্লাহকে মান্য করল, আর যে আমাকে অমান্য করল সে আল্লাহকে অমান্য করেছে।" (বুখারী)
ইবনে তাইমিয়া, একজন বিখ্যাত মুজাদ্দিদ (পুণর্জাগরণকারী), আলেম এবং মুজাহিদ, তিনি বলেন, "দাড়ি কামানো হারাম- কোনো আলেম দাড়ি কামানোর অনুমোদন করেনি।"
এ সম্পর্কে আমাদের এই আয়াতটি স্মরণ করা উচিত যেখানে আল্লাহ, মহাপবিত্র ও মহামহিম বলেন,
"আমি যখনই কোন রাসূল পাঠিয়েছি তাকে এজন্যেই পাঠিয়েছি যে, আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী তার শর্তহীন আনুগত্য করা হবে।"( নিসা ৬৪)
[১০] দাড়ি লম্বা করার এই আদেশটির মর্যাদা এতটাই ছিল যে, দীন ইসলামের সবচেয়ে বড় আলেমগণ ইমাম আবু হানিফা, আহমাদ, আস-সাওরি বলেছেন, "যদি কারো দাড়ি 'আক্রান্ত' হয় পুরোপুরি মুণ্ডন করার দ্বারা, এবং তা আর বেড়ে না উঠে, তাহলে দুষ্কৃতকারীকে এর পূর্ণ মূল্য (দিয়াহ) দিতে হবে, যেন সে দাড়িওয়ালা ব্যক্তিকে হত্যা করেছে।" ইবন আল মুফলিহ (রাহিমাহুল্লাহ) ব্যাখা করে বলেন যে, "এটা এ কারণে যে, দুষ্কৃতকারী দাড়ি বেড়ে উঠার সমস্ত কার্যক্রমকে ব্যাহত করেছে। এটা সেই অপরাধের সমান যা আমরা কারো দৃষ্টি ছিনিয়ে নিলে বিবেচনা করি।"
(৭) স্বাভাবিক অবস্থার বিকৃতি ঘটানো
আব্দুল্লাহ বিন ইয়াজিদ আল আনসারী বর্ণিত, " নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন-নুহবা এবং আল-মুথলা নিষেধ করেছেন।" [১১]
সুমরাহ এবং ওমরান বিন হুসেইন রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকে বর্ণিত,
"প্রত্যেক খুতবায় নবীজী আমাদেরকে দান করতে ও আল-মুথলা(আকার বিকৃতি) থেকে বেঁচে থাকার কথা না বলে শেষ করতেন না।" [১২]
ইবন আস শাকির হতে বর্ণিত, ওমর বিন আব্দুল আযিয (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, "দাড়ি কামানো হল মুথলা এবং নবীর নিষেধ করা কাজের একটি হল মুথলা"।
ইমাম ইবন হাজম রাহিমাহুল্লাহ , তাঁর বই 'মারাতিব আল-ইজমা' (ঐক্যমতের স্তর) এ উল্লেখ করেন," তাঁরা (আলেমগণ) একমত হয়েছেন যে, দাড়ি কামানো হল মুথলা এবং এটা অননুমোদিত।"
আলেমগণের কেউ কেউ দাড়ির ছেটে ছোট করাকে মুথলা বলেছেন, অনেকে গোঁফ কামিয়ে ফেলাকে মুথলা বলেছেন। একবার ভেবে দেখুন, সম্পূর্ণ দাড়ি কামিয়ে ফেলার মত অবস্থা সৃষ্টি হলে আলেমগণের বক্তব্য কি হতো? চেহারা হল মানুষের শরীরের সবচেয়ে সুন্দরতম অংশ এবং সৌন্দর্যের কেন্দ্র। চেহারা একটি সম্মানিত অংশ, একারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুয়া আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
"যখন তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত হয় সে যেন চেহারাকে এড়িয়ে চলে" আরেকটি বর্ণনায়, "সে মুখে আঘাত করবে না"। [১৩]
সুয়ায়েদ বিন মিকরিন একজন লোককে দেখলেন যে তার ছেলেকে মুখে আঘাত করছে (চড় মারছে), তিনি বলেন, "তুমি কি জানোনা যে সুরাহ (চেহারা) সম্মানিত?" (মুসলিম)
কি অদ্ভুত আজকের সমাজে আমাদের আচরণ যখন আমরা তাদের শেভ করা মসৃণ গাল দেখে অভিনন্দন জানিয়ে বলি, "কি মসৃণ !" ( আরবিতে Na'eeman)
সমাজের নিকৃষ্ট লোকেরাও দাড়ি কামাতে লজ্জা বোধ করত !
এটা সহজেই অনুমিত যে প্রথম যুগের মুসলিম আলেমগণের কেউই কোনোদিন দাড়ি কামাননি। একবারও নয়। তৎকালীন মুসলিম শাসকেরা যাদের অনেকেই জাহেল ছিলেন তারা পর্যন্ত কোন দুষ্কৃতিকারীকে শাস্তি দিতে হলে তার দাড়ি কামিয়ে দিতেন এবং গাধা বা অন্য কোন পশুর পিঠে চড়িয়ে শহরময় ঘুরিয়ে আনতেন, সেই নিচু লোকগুলো পর্যন্ত তাদের দাড়ি কামানো চেহারা দেখানোর এই শাস্তিকে খুবই লজ্জাজনক মনে করত ! কেননা, দাড়ি কামানো; এটা হচ্ছে মেয়েলি একটা স্বভাব। এই জন্যেই অনেক আলেম মতামত দিয়েছেন, "কাউকে লঘু শাস্তি দিয়ে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে হলে তার মাথা কামিয়ে দাও কিন্তু দাড়ি কামিও না।" কারণ, প্রকৃতপক্ষে দাড়ি কামানো হারাম । আমরা কি দেখি না, যখন ইহরামের সময় শেষ হয়ে আসে তখন সুন্নাহ হচ্ছে মাথার চুল কামিয়ে ফেলা কিন্তু তখনও দাড়ি কামানো নয় ! সালফে সালেহীনগণের কঠোর অবস্থান ছিল সেই সকল লোকের সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যাপারে যারা কিনা নিজেদের দাড়ি কামিয়ে ফেলত। তাদেরকে অবিশ্বস্ত লোকে বলেই ইসলামে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। দুসুকী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, "একজন পুরুষের দাড়ি কামানো হারাম, আর যে এটা করে তাকে অবশ্যই শাস্তি দিতে হবে।"
[৩] মুসলিম; বুখারী, ৯ম খণ্ড, ৩৯১
[৪] বয়সন্ধিকালীন বালক
[৫] বুখারী, ৭ম খণ্ড, ৮২২
[৬] তাফসীর আত-তাবারী অনুসারে
[৭] হাসান, সহীহ আল জা'মে ৫৪৩৯
[৮] মুসলিম, হাদীস ৫৯২
[৯] [আহমাদ, তিরমিযি, নাসায়ী] শায়খ আলবানী একে সহীহ বলেছেন।
[১০] http://www.islamqa.com/en/ref/98500 শায়খ সালিহ আল মুনাজ্জিদ
[১১] বুখারী, ৭ম খণ্ড, ৪২৫
[১২] হাদীসটি হাসান
[১৩] বুখারী, ৩য় খণ্ড, ৭৩৪
লক্ষ্যণীয়, 'আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন ঘটানো'র মাঝে ফিতরাগত বৈশিষ্ট্য অন্তর্ভ

Monday 17 August 2015

http://islamqa.info/en/124812

“Whoever visits my grave after I die, it is as if he visited me when I was still alive”-this hadith judged to be false

Fatwa No: 2534
Quote:
Q: "How sound is the hadeeth “Whoever visits my grave after I die, it is as if he visited me when I was still alive”?
A: "Al-Daaraqutni reported in his Sunan (2/278) with an isnaad from Haatib that the Messenger of Allaah (peace and blessings of Allaah be upon him) said: “Whoever visits me after I die, it is as if he visited me when I was still alive…”
"This is a hadeeth which many of the scholars of hadeeth judged to be false and not to have been reported with a saheeh isnaad from the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him). Among the scholars who voiced this opinion was al-Haafiz al-Dhahabi in Lisaan al-Meezaan (4/285), in his biography of one of the narrators, Haaroon ibn Abi Qaz’ah.
Al-Dhahabi said: “…Haaroon ibn Abi Qaz’ah al-Madani [reported] from a man” – about visiting the grave of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him).
Al-Bukhaari said: “This is not to be accepted or followed.”
Al-Haafiz Ibn Hajar said in Lisaan al-Meezaan (6/217): “Al-Azdi said: ‘Haaroon Abu Qaz’ah reports mursal ahaadeeth from a man of Aal Haatib.’ I [Ibn Hajar] say: from this we understand that what he is referring to is al-Azdi. Ya’qoob ibn Shaybah also classed him as da’eef (weak).”
Al-Haafiz ibn Hajar also mentioned him in al-Talkhees al-Habeer, in his comment on the ahaadeeth of al-Raafa’i al-Kabeer (2/266). He said, “In his isnaad is the unknown [majhool] man” – meaning a man from Aal Haatib.
"Ibn Taymiyyah said in al-Tawassul wa’l-Waseelah (p. 134) about this hadeeth:
 “It is obviously a lie that goes against Islam.

[...]
He also said (p. 133): “All of the ahaadeeth about visiting his grave are da’eef, and are not to be relied upon in matters of religion. For this reason none of the authors of books of Saheeh and Sunan reported them at all; they were only narrated by those who reported da’eef ahaadeeth, such as al-Daaraqutni, al-Bazzaar and others.
 "al-Albaani said in al-Da’eefah (no. 1021) about this hadeeth: it is baatil (false). He mentioned what is wrong with the hadeeth, namely the man who is not named, and classed Haaroon Abu Qaz’ah as da’eef. There is a third fault with the hadeeth, which is that it causes confusion and contradiction.
Then  al-Albaani said: “In general, the isnaad of this hadeeth is weak.”
He also said in al-Da’eefah (no. 47): “many people think that Shaykh al-Islam Ibn Taymiyah and those who follow him among the Salafis forbid visiting the grave of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) altogether. This is a lie and a fabrication, and it is not the only lie told about Ibn Taymiyah, may Allaah have mercy on him, or about the Salafis.

*Everyone who reads the books of Ibn Taymiyah will see that he says it is permissible to visit his grave (peace and blessings of Allaah be upon him), and that doing so is recommended (mustahabb), so long as it is not associated with any objectionable practices or innovations (bid’ah), such as travelling solely for that purpose, because of the hadeeth “No one should set out purposely except to visit three mosques.”
"The hadeeth does not describe a ban only on travelling to visit other mosques, as many people think; it also includes a ban on setting out to visit any place which people think will bring them closer to Allaah, whether it is a mosque, a grave or any other place. This is indicated by the hadeeth narrated by Abu Hurayrah who said: ‘I met Basrah ibn Abi Basrah al-Ghifaari and he asked me, ‘Where are you coming from?’ I said, ‘From al-Toor [Sinai].’ He said, ‘If I had met you before you left, you would not have gone there! I heard the Messenger of Allaah (peace and blessings of Allaah be upon him) say: ‘Do not travel except to three mosques.’” (Reported by Ahmad and others with a saheeh isnaad).
This clearly indicates that the Sahaabah understood the hadeeth to be general in application [i.e., it did not apply only to mosques]. This is supported by the fact that it is not reported that any of them ever set out with the intention of visiting a grave. They are the predecessors of Ibn Taymiyah in this regard, so whoever condemns Ibn Taymiyah is in effect condemning the salaf (the righteous predecessors), may Allaah be pleased with them. May Allaah have mercy on the one who said:
“All goodness is in following those who went before (the salaf)
and all evil is in following the innovations of those who came later.”
In conclusion, travelling with the intention of visiting the grave of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) is bid’ah and is haraam, because of the hadeeth which forbids travelling to worship in any place except the three mosques.
As for visiting the grave of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) when one happens to be in Madeenah, this is perfectly acceptable, as is travelling with the intention of praying in the Prophet’s Mosque as an act of worship and seeking to draw close to Allaah. Those that are confused about this issue are those who do not understand the difference between what is permitted and what is forbidden. And Allaah knows best.”
Sheikh Muhammed Salih Al-Munajjid

[End of Quote]
http://salafiaqeedah.blogspot.in/2012/02/travelling-to-visit-grave-of-prophet.html

Hadeeth Concerning the Virtue of Praying Forty prayers in the Prophet’s Mosque-is a da’eef (weak) hadeeth

34752: Hadeeth Concerning the Virtue of Praying Forty prayers in the Prophet’s Mosque


I heard that whoever prays forty prayers in the Prophet’s Mosque, it will be recorded that he is free of hypocrisy. Is this hadeeth (prophetic narration) saheeh (authentic)?
Praise be to Allah. This hadeeth was narrated by Ahmad (12173) from Anas ibn Malik (may Allah be pleased with him) from the Prophet (peace and blessings of Allah be upon him), who is reported to have said, “Whoever prays forty prayers in my Mosque, missing no prayer, it will be recorded that he is safe from the Fire, is saved from punishment and is free of hypocrisy.” This is a da’eef (weak) hadeeth. 
This was mentioned by al-Shaykh al-Albani in al-Silsilah al-Da’eefah (364), who said: It is da’eef. He also mentioned it in Da’eef al-Targheeb (755) and said, it is munkar (a kind of weak hadeeth).
Al-Albani said in his book Hujjat al-Nabi (peace and blessings of Allah be upon him) (p.185) that it is an innovation (bid’ah) to visit Madeenah and tell the visitors to Madeenah to stay there for a week so that they will be able to offer forty prayers in the Prophet’s Mosque so that they will be free from hypocrisy and saved from the Fire.
Al-Shaykh Ibn Baz said:
With regard to the widespread idea that the visitor should stay for eight days so that he can offer forty prayers in the Mosque is wrong. Although it says in some hadeeths, “Whoever offers forty prayers therein Allah will decree that he is safe from the Fire and free from hypocrisy,” this hadeeth is da’eef according to the scholars and cannot be taken as proof or relied upon. There is no set limit for visiting the Prophet’s Mosque. If a person visits for an hour or two, or a day or two, or for more than that, there is nothing wrong with that.
Fatawa Ibn Baz, 17/406
Instead of this hadeeth we should look at the hasan (sound) hadeeth narrated by al-Tirmithi (241) concerning the virtue of always being present for the opening takbeer (saying Allahu Akbar) of prayer in congregation. It was narrated that Anas ibn Malik (may Allah be pleased with him) said: The Messenger of Allah (peace and blessings of Allah be upon him) said, “Whoever prays for forty days with the congregation, always being present for the first takbeer, it will be written that he will be safe from two things: he will be safe from the Fire and safe from hypocrisy.” Classed as hasan by al-Albani in Saheeh al-Tirmithi, 200.
The virtue mentioned in this hadeeth is general and applies to any mosque where prayers are offered in congregation, in any land; it does not apply only to al-Masjid al-Haram [in Makkah] or al-Masjid al-Nabawi [in Madeenah] in particular.
Based on this, whoever consistently prays forty days in congregation in which he is present for the first takbeer, it will be recorded that he will be safe from two things: safe from the Fire and safe from hypocrisy, whether the mosque is in Madeenah, Makkah or anywhere else.
And Allah knows best. 

http://islamqa.info/en/34752

follow story only-ইবরাহীম(আ:)-ইয়াকূব (আঃ)-ইসমাঈলের(আঃ)-


 
 
ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ছিলেন হযরত নূহ (আঃ)-এর সম্ভবত: এগারোতম অধঃস্তন পুরুষ। নূহ থেকে ইবরাহীম পর্যন্ত প্রায় ২০০০ বছরের ব্যবধান ছিল। হযরত ছালেহ (আঃ)-এর প্রায় ২০০ বছর পরে ইবরাহীমের আগমন ঘটে। ঈসা (আ:)থেকে ব্যবধান ছিল ১৭০০ বছর অথবা প্রায় ২০০০ বছরের। তিনি ছিলেন ‘আবুল আম্বিয়া’ বা নবীগণের পিতা এবং তাঁর স্ত্রী ‘সারা’ ছিলেন ‘উম্মুল আম্বিয়া’ বা নবীগণের মাতা। তাঁর স্ত্রী সারার পুত্র হযরত ইসহাক্ব-এর পুত্র ইয়াকূব (আঃ)-এর বংশধর ‘বনু ইসরাঈল’ নামে পরিচিত এবং অপর স্ত্রী হাজেরার পুত্র হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশে আগমন করেন বিশ্বনবী ও শেষনবী হযরত মুহাম্মাদ(ছাল্লাল্লা-হু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)। যাঁর অনুসারীগণ ‘উম্মতে মুহাম্মাদী’ বা ‘মুসলিম উম্মাহ’ বলে পরিচিত।
বাবেল হ’তে তিনি কেন‘আনে (ফিলিস্তীন) হিজরত করেন। সেখান থেকে বিবি সারা-র বংশজাত নবীগণের মাধ্যমে আশপাশে সর্বত্র তাওহীদের দাওয়াত বিস্তার লাভ করে। অপর স্ত্রী হাজেরার পুত্র ইসমাঈলের মাধ্যমে বায়তুল্লাহ ও তার আশপাশ এলাকায় তাওহীদের প্রচার ও প্রসার হয় এবং অবশেষে এখানেই সর্বশেষ ও শ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ (দ:)-এর আগমন ঘটে। এভাবে ইবরাহীম(আ:)এর দুই স্ত্রীর বংশজাত নবীগণ বিশ্বকে তাওহীদের আলোয় আলোকিত করেন। শেষনবী মুহাম্মাদ (দ:)-এর দেহসৌষ্ঠব ও চেহারা মুবারক পিতা ইবরাহীম (আঃ)-এর ন্যায় ছিল। যা তিনি মে‘রাজ থেকে ফিরে এসে উম্মতকে খবর দেন।
এই রওজা মুবারক ফিলিস্তিনের হেব্রনে অবস্থিত

সালাতের নিয়ত???


আমি নিয়ত করিতেছি যে, এই ইমামের পিছে কিবলা মুখি হইয়া জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজ আল্লাহর ওয়াস্তে শুরু করিলাম- আল্লাহু আকবার।
প্রশ্ন:
১. সালাতের মাঝে ব্যাক্তি যদি মনে মনে ভাবে যে, আমার সালাত অন্য জনে দেখতেছে আরো সুন্দর করে পড়ি। তাহলে কি তার সালাত হবে?
২. কিছু ইবাদাত আল্লাহর ওয়াস্তে আর কিছু কি আল্লাহর ওয়াস্তে নয়? তাহলে কার জন্য?
৩. কিবলা মুখি বলার কি দরকার আছে? নামাজজেতো এমনিতেই কিবলার দিকে তানাহলে মসজিদের মুখ কোন দিকে?
৪. তারাহুরো করে ব্যাক্তি জদি জোহরের জায়গায় আসর বলে ফেলে তাহলে কি নামাজ হবে?
জ্ঞানোবান মহদয় ভাই/বোনেরা কাছে এসে উত্তর দেন।
COMMENTS:-

  • Abdullah Sahzi পুরো এই বানোয়াট নিয়তটিই বিদআত ৷ আর বিদআত একটি ভয়কর পাপের কাজ ৷ আল্লাহর ওয়াস্তে এটি পরিত্যাগ করুন ৷
    12 hrs · Like · 2
  • Abdullah Al Bellal ভাই উওর দেয়ার মতো হানাপি মাযাবে কেউ আছে বলে আমার মনে হয়না ভাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন ঠিক মত নামাজ পড়তে পারে
    12 hrs · Like · 2
  • Borhan Uddin Foyez //৩. কিবলা মুখি বলার কি দরকার আছে? নামাজজেতো এমনিতেই কিবলার দিকে তানাহলে মসজিদের মুখ কোন দিকে?//=প্রস্ন টা ভাল হইছে!! কাশফে মনে হয় মাসিজেদের দিক চেঞ্জ হইয়া যায়!! smile emoticon
    12 hrs · Like · 2
  • Wakil Uddin ৪. নামায হয়ে যাবে| তবে কথা হল নিয়্যত মনেরটাই আসল|
    12 hrs · Like · 3
  • Islam Islam প্রশ্ন গোলোর দলিল ও যুক্তি দিয়ে গবেষনা বিত্তিক প্রমান পেলে আমাদের ভাল হতে ।
    10 hrs · Like · 1
  • পিস ইন ইসলাম Wakil Uddin ভাই, মুখেতো নিয়ত করছি একবার? তাহলে কি মুখেরর নিয়ত পড়ার কোন মূল্য নাই?
  • Md Ismail Hosen 1. একে লোক দেখানো ইবাদত বলে বা রিয়া, রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদত ভংয়কর গোপন শিরক, আর শিরক করার ফলে তাকে জাহান্নামের শাস্তি পেতে হবে। এ ইবাদত কবুল হবে না। →ভয়ংকর গোপন শিরকঃ- “রিয়া” বা লোক দেখানো ইবাদত →“আপনি বলুনঃ নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার কোরবানি এবং আমার জীবন ও মৃত্যু - বিশ্ব- প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য।” সুরা আল-আনআ’মঃ ১৬২। →“আপনি বলুনঃ আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। আমার কাছে ‘ওয়াহী’ করা হয় যে, তোমাদের ইলাহ হচ্ছেন ‘একমাত্র’ ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন নেক আমল করে এবং তার পালনকর্তার ইবাদতে কাউকে শরীক না করে।” সুরা আল-কাহফঃ ১১০। →নবী করীম সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “আমি তোমাদের ব্যাপারে ছোট শিরক থেকে খুব ভয় করছি। সাহাবীরা বললেন – ইয়া রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম! ছোট শিরক কি? →রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তা হলো “রিয়া” বা লোক দেখানো ইবাদত। যেদিন আল্লাহ তাআ’লা বান্দাদের আমলের পুরস্কার প্রদান করবেন, সেদিন রিয়াকারীদেরকে বলবেনঃ যাও, দুনিয়াতে যাদেরকে দেখানোর জন্য আমল করতে, তাদের কাছে যাও। দেখো তাদের কাছ থেকে কোনো পুরস্কার পাও কিনা?” মুসনাদে আহমাদ, সহীহ ইবনে খুজায়মা, হাদীসটি সহীহ – শায়খ আলবানী। → রাসূলে আকরাম (সাঃ) বলেছেনঃ “কিয়ামাতের দিন যখন আল্লাহ তায়ালা তাঁর সত্ত্বার কিয়দংশ উন্মোচিত করবেন, তখন ঈমানদার নারী- পুরুষগণ সকলেই তাঁর সম্মুখে সিজদায় পড়ে যাবে। তবে সিজদা থেকে বিরত থাকবে কেবল ঐ সমস্ত লোক, যারা দুনিয়াতে মানুষকে দেখানোর জন্য ও প্রশংসা পাওয়ার জন্য সিজদা (সালাত আদায়) করতো। তারা সিজদা করতে চাইবে বটে, কিন্তু তাদের পিঠ ও কোমর কাঠের তক্তার মত শক্ত হয়ে যাবে।” বুখারী, মুসলিম, মিশকাতঃ ৫৩০৮। মহান আল্লাহ বলেন : →“(আমি ছাড়া অন্যের সন্তুষ্টির জন্য) তারা যেসব আমল করবে, আমি তাদের কৃতকর্মের প্রতি মনোনিবেশ করব, অতঃপর সেইগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করে দেব।” সুরাহ আল- ফুরকানঃ ২৩। https://m.facebook.com/groups/707355736054247...

  • Md Ismail Hosen ৪) মুখে বা উচ্চারনে নিয়্যাত করা বিদআত, এটা সুন্নাত পরিপন্থী কাজ। হাদীসে এসেছে রাসূল (সঃ) আল্লাহু আকবার বলে নামাজ শুরু করতেন এবং সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ করতেন।
  • Abdul Baqui vi rag rag kora bolchen kano? valo kora bolon na amrao to Muslim ...jata vol sta sothik vaba bolon..
  • Md Ismail Hosen ২) ইবাদত একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য, ইবাদতের যোগ্য আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই। লা ইলাহা ইলল্লালহ - আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নাই। এবং নিশ্চয় মসজিদ সমূহ আল্লাহ তাআলাকে স্মরন করার জন্য। অতএব তোমরা আল্লাহ তাআলার সাথে অন্য কাউকে ডেকোনা। (সূরা জিন :আয়াত সংখ্যা -১৮)
  • Khalid Hasan পিস ইন ইসলাম যদি কাওকে শেখানোর উদ্দেশ্য থাকে তাহলে ভাল ভাবে টপিক্স উপস্থাপন করবেন।এই রকম ঝগড়ামূলক পোষ্ট করবেন না।সহি আক্বিকা দাবি করেন আবার পশ্ন করেন যাতে করে ফিৎনা হতে পারে বিষয় টা কেমন হয়ে গেল না।আর যদি সত্ত্যি আপনার উত্তর জানা না থাকে তাহলে ভাল কোন আলেম এর কাছে থেকে জেনে নিবেন। দয়া করে জেনে বুঝে ফিৎনা সৃষ্টিকারী পোষ্ট করবেন না।আর কথায় কথায় হানাফি হানাফি করেন কেন।আগে উস্কানি দিবেন? তার পর দাওয়াত দিবেন?হল এটা??
  • AL Noor Tareq চেতেন কেন ভাই এ কাজ গুলাতো হানাফীরা করে থাকে, হানাফীদের প্রশ্ন গুলার উত্তর দেওয়া উচিত #Khalid ,